Friday, December 23, 2016

'ভুতুড়ে' দ্বীপ থেকে সাবধান! - না পড়লে Miss করবেন




ইতালির উপকূল-ঘেঁষা খুদে দ্বীপ কিনলে দুর্ভাগ্য না কি পিছু ছাড়ে না নেপ্লসের কাছে এক চিলতে দ্বীপ গাইওলাকে ঘিরে যুগ যুগ ধরে ঘনিয়েছে রহস্যজাল
নেপ্লস উপকূল থেকে সাঁতরেই ইসোলা লা গাইওলা-তে পৌঁছানো যায়। খুব ছোট ভূখণ্ডটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব কম নয়। রোমানরা তার নাম দিয়েছিলেন 'ইউপ্লিয়া' দ্বীপের ওপর তৈরি করেছিলেন দেবী ভেনাসের মন্দির। কালক্রমে তা ধ্বংস হয়েছে। বিখ্যাত রোমান কবি ভার্জিল এই দ্বীপকে ভালোবেসেছিলেন। এখানে বসেই তিনি তার অনুগামীদের প্রশিক্ষণ দিতেন বলে কথিত।
আঠারো শতকে গাইওলা দ্বীপে এক সন্ন্যাসী এসে আস্তানা গাড়েন। স্থানীয়রা তাকে 'উইজার্ড' বা জাদুকর বলে ডাকত। তাকে খাদ্য জোগাতেন এলাকার মত্স্যজীবীরা। একদিন কোন অজানা কারণে দ্বীপ থেকে উধাও হয়ে যান সেই সন্ন্যাসী। তবে ডেরা ছাড়ার আগে তিনি না কি দ্বীপটিকে অভিশাপ দিয়ে যান।
এর পরে এই দ্বীপের মালিকানা যাদের হাতে এসেছে, তাদের জীবনে আচমকা নেমে এসেছে দুর্ভাগ্য। ১৯২০-এর দশক থেকে তার শুরু। সেই সময় গাইওলা দ্বীপ কিনেছিলেন হ্যান্স ব্রন নামে এক সুইস ভদ্রলোক। একদিন ভিলার ভিতর থেকে উদ্ধার হয় কম্বলে জড়ানো তার মৃতদেহ। মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। এর কিছু দিনের মধ্যেই সমুদ্রে ডুবে মারা যান হ্যান্সের স্ত্রী।
এতেই শেষ নয়, এর পরে দ্বীপের মালিক হন অটো গ্রানব্যাক নামে এক জার্মান। ওই ভিলাতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে এক রাতে তার মৃত্যু হয়। ছাড়া, পরবর্তী আরও এক মালিক, মরিস-ইভেস স্যান্ডোজ সুইজারল্যান্ডের মানসিক হাসপাতালে আত্মহত্যা করেন। এর বেশ কয়েক বছর পরে গাইওলা দ্বীপ কেনেন ফিয়াট সংস্থার কর্ণধার জিয়ানি অ্যাগনেলি। শোনা যায়, কয়েক বছরের মধ্যে তার বেশ কয়েকজন আত্মীয় মারা যান। একদা দ্বীপের মালিকানা আসে লক্ষ-কোটিপতি পল গেটির হাতে। তার কয়েক দিনের মধ্যেই গেটির নাতি অপহৃত হয়। শেষ বার গাইওলা দ্বীপ কিনেছিলেন বিমা সংস্থার মালিক জিয়ানপাস্কুয়েল গ্রাপোন। দ্বীপ কেনার কয়েক বছরের মধ্যে অপরিশোধিত ঋণের দায়ে তার হাজতবাস হয়।
গাইওলার বর্তমান মালিক ক্যাম্পানিয়া আঞ্চলিক প্রশাসন। সরকারি উদ্যোগে তৈরি হয়েছে গাইওলা আন্ডারওয়াটার পার্ক। এলাকাটি ইতালীয় নৌসেনার অধীনস্থ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। তবে নির্জন এই দ্বীপকে এড়িয়ে চলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রহস্যময় অতীত বুকে নিয়ে আজও সেখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে পরিত্যক্ত ভিলা।

No comments:

Post a Comment