Wednesday, December 21, 2016

মৃত্যুর ১০ ঘণ্টা পরে বেঁচে উঠলেন বৃদ্ধা





মৃত মানুষ আর কখনো পুনরুজ্জীবিত হয়ে ওঠেন না কিন্তু পৃথিবীতে এমন অনেক ঘটনাও ঘটে, যার কোনও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা মেলে না
সম্প্রতি সেরকমই একটি অত্যাশ্চর্য ঘটনা ঘটে গেল ভারতের উত্তর প্রদেশের বুলন্দশহরে। যেখানে এক নব্বই বছর বয়সী নারী মৃত্যুর দশ ঘণ্টা পরে আবার বেঁচে উঠলেন। শুধু তাই নয়, বেঁচে উঠে তিনি জানালেন,যম রাজের সঙ্গে তার মোলাকাতের কাহিনি।
বুলন্দশহরের অন্তর্গত খুর্জা গ্রামের বাসিন্দা কৈলা দেবীর বয়স ৯০ ছুঁয়েছে। দিনকয়েক আগে আকস্মিকভাবেই তার মৃত্যু হয়। বয়স হয়েছিল যথেষ্ট, ফলে হঠাৎ করে কৈলা দেবীর মৃত্যু তার আত্মীয়-পরিজনকে শোকাহত করলেও বিস্মিত করেনি। কৈলা দেবীর মৃত্যুসংবাদ ছড়িয়ে পড়তেই তার বাড়িতে ভিড় জমান তার পরিজন আর পাড়া-প্রতিবেশীরা। ডাক্তার ডেকে আনা হয়। তিনি কৈলা দেবীর দেহ পরীক্ষা করে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
শেষকৃত্যের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন সকলে। শুরু হয় মৃতদেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ। এইসব কাজে প্রায় ঘন্টা দশেক সময় পেরিয়ে যায়। উপস্থিত মানুষজনের চিন্তা ছিল, দেহে পচন ধরতে পারে। তাই কৈলা দেবীর দেহটি শুইয়ে দেওয়া হয় বরফের উপরে। কিন্তু তারপরেই ঘটে এক চমকে দেওয়ার মতো ঘটনা। খুলে যায় বৃদ্ধার চোখ। কথা বলতে শুরু করেন মৃত কৈলা। উপস্থিত পাড়া প্রতিবেশী ভয়ে পড়িমড়ি করে দৌঁড় দেন। যারা সাহস করে দাঁড়িয়ে ছিলেন, তাদেরও বিস্ময়ের অবধি থাকে না।
পরে অবস্থা শান্ত হলে সকলে কৈলা দেবী জানান তার বিচিত্র অভিজ্ঞতার কথা। তিনি বলেন, তিনি ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। হঠাতই দেখেন, চারটে ষণ্ডামার্কা লোক তার সামনে দাঁড়িয়ে। তাদের মধ্যে এক জনের লম্বা দাড়ি ছিল। কৈলা দেবী বুঝতে পারেন, তিনি মারা গেছেন, এবং যমদূতেরা এসেছে তাকে যমলোকে নিয়ে যেতে। লম্বা দাড়িওয়ালা মানুষটিই যে যমরাজ, তা- বুঝতে বাকি থাকে না কৈলা দেবীর। এরপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় যমলোকে। সেখানে নাকি এক জন লোক কীসব খাতাপত্রে লেখা হিসেব-নিকেশ দেখে কৈলা দেবীকে জানান, এখনও তার আয়ু শেষ হয়নি। তার পৃথিবীবাসের মেয়াদ ফুরনোর আগেই ভুলবশত তাকে পরলোকে নিয়ে আসা হয়েছে। ফলে আবার তাকে পৃথিবীতে ফেরত পাঠানো হবে। এরপরেই তিনি জেগে ওঠেন। এবং দেখতে পান, তিনি বরফের উপরে শুয়ে রয়েছেন।
কিন্তু এই সমস্ত ঘটনার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা কী? যে ডাক্তার কৈলা দেবীকে পরীক্ষা করে তাকেমৃতবলে ঘোষণা করেছিলেন সেই সনাতন যাদব নিজেও বিস্মিত। তিনি জোরের সঙ্গে বলেন, ‘আমি ভালভাবেই কৈলা দেবীকে পরীক্ষা করেছিলাম। তিনি যে মারা গিছিলেন, সেই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু কীভাবে তিনি আবার বেঁচে উঠলেন, সেটা আমিও ভেবে পাচ্ছি না।
সত্যিই কি একজন মানুষের মৃত্যুর দশ ঘণ্টা পরে তার পুনরুজ্জীবন সম্ভব? কলকাতার ডাক্তার মনোহর বৈদ্যের সঙ্গে এবিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘পৃথিবীতে এমন ঘটনা আগেও ঘটেছে। কোনও কারণে কোনও মানুষের হৃদস্পন্দন স্তব্ধ হয়ে যাওয়ার কিছু পরে আবার তা চালু হয়ে গেছে। এমনটা সম্ভব। কিন্তু মৃত্যুর দশ ঘন্টা পরে এক জন মানুষের বেঁচে ওঠার ঘটনা অবিশ্বাস্য। আমার ধারণা, ওই নারী হয়তো কোমায় চলে গেছিলেন। তারপর কোমা থেকে ফিরে এসেছেন। স্থানীয় ডাক্তারের পরীক্ষায় কোথাও ভুল হয়েছিল নিশ্চয়ই। তাছাড়া দশ ঘণ্টার সময়পর্বটির মধ্যেও অতিরঞ্জন রয়েছে বলে আমার বিশ্বাস।

Collected: BD Protidin

No comments:

Post a Comment